১৯৭১ সালে শেইখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশের “রাজাকার ” বাহিনী ও পাক সেনা কে হারিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি করেছিল । পাকিস্তানী সৈন্য এবং রাজাকার দের অত্যাচারে হাজার হাজার হিন্দু শরণার্থী হয়ে ,রিফিউজি হয়ে পশ্চিম বঙ্গ ,ত্রিপুরা ,আসাম ,মেঘালয়ে দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে তাদের প্রাণ বাঁচাতে ।সেই নৃশংস অত্যাচার বর্ণনা করতে গিয়ে চোখের জল ফেলছিলেন “নোয়াখালীর সুশীল গঙ্গোপাধ্যায় ,যিনি ছিলেন তৎকালীন পূর্ব -পাকিস্তানের এক জমিদার বংশের ছেলে ” ।তিনি
বাকরুদ্ধ কণ্ঠ বলেন পাকিস্তানী সেনা ও রাজাকার বাহিনীর যৌথ অভিযানে আমাদের ও আসে পাশের সব লোকেদের বাড়ি ঘর দোর পুরিয়ে দেয়া হয় ,সম্পত্তি লুট হয় ,নির্বিচারে ধর্ষণ করা হয় মহিলা দের এবং রক্তে রাঙা হয়ে ওঠে নোয়াখালীর মাঠি । বর্তমানে প্রৌঢ় ,সেই সময় সুশীল বাবুর বয়েস ছিল মাত্র ১২ বছর ,তিনি কান্না ভেঁজা গলা তে বলেন সেই দুঃসহ দিনগুলি আবারো দেখতে হচ্ছে বলে তিনি বাক রুদ্ধ হয়ে পরেন ।তিনি বলেন হিন্দুরা বাংলদেশে সেই ১৯৪৭ শাল থেকে ১৯৭১ হয়ে আজ অব্দি অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। কথা বলা হয়েছিল আরেক ব্যক্তি পরেশ দাসের সাথে ,যিনি ১৯৫৬ সালে তদান্তিন পূর্ব পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় ।পরেশ বাবু বলেন “আমার পিতা মহ কে টেনে নিয়ে কোপানো হয় ,আমার বোনেদের ধর্ষণ করা হয় ,বর্তমানে আমরা ভারতে শান্তিতে থাকলেও আমাদের আত্মীয়রা নোয়াখালী তে সেই চরম অশান্তি ভোগ করছে ,আমি তাদের বারে বারে বলেছি সব ফেলে দিয়ে ভারতে চলে এসো । তৃতীয় প্রৌঢ়, রসময় বিশ্বাস যিনি বর্তমানে কলকাতার নিউ টাউনের বাসিন্দা। তার সাথে কথা বলতে গিয়ে জানা যায় ১৯৭১ সালে প্রাণ ভয়ে তার পরিবার দিনের পর দিন জঙ্গলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল এবং কাটিয়েছে অভুক্ত অবস্থায় ।পরে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। তিনি বলেন আমাদের অনেকে এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা তে ছড়িয়ে আছে ,আমি ভারত সরকারের কাছে আবেদন করছি এই হত্যালীলা বন্ধ করুন ,এবং সংখ্যালঘু হিসাবে তারা যেন ভারতের সংখ্যা লঘুদের মত সসম্মানে সেই দেশে বাস করতে পারে । আরেকটি মর্মান্তিক বক্তব্য সোনা যায় বর্তমান বনগাঁ নিবাসী,১৯৭১ সালের শরণার্থী অনিমা দাশের কণ্ঠে ।তিনি বলেন ” সেই সময়কার রাজাকার বাহিনী আমি গর্ভবতি থাকালীন, যখন আমার ছোট ছেলের হাত ধরে ভারতে আসছি ,তখন আমার উপর শারীরিক অত্যাচার করে, সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেলেন । এরা প্রায় সকলেই এক বাক্যে ,বাংলাদেশে বসবাস কারী হিন্দু দের মান সন্মান নিয়ে বাঁচতে হলে ভারতে চলে আসার পরামর্শ দেয় । হারাধন দাস নামক আরেক ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশ থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে এসেছেন তিনি সেই কথাই বলেন, তিনি বলেন “হিন্দুরা ঐতিহাসিক ভাবেই বাংলাদেশে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে,অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতে চলে এসেছে ,কিন্তু যারা থেকে গিয়েছেন বার বার বিপদের সম্মুখীন হয়েছে “।নিচে দেওয়া রইলো ইন্টারভিউ ভিডিওটির লিংক
সৌজন্য ওয়ানইন্ডিয়া
ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
সুশীল গঙ্গোপাধ্যায় থেকে অনিমা দেবী, রসময় বাবু । সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করেছেন যে ভারত সরকারের উচিত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা ।বাংলাদেশের হিন্দু দের বাঁচানো উচিত । তারা কি বিভীষিকা ময় পরিস্থিতিতে আছেন তা তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে ভালোই বুঝতে পারছেন তারা ।