খবর ঘন্টায় ঘন্টায় ওয়েবডেস্ক : প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা আলোচনা করবো এমন একজন বর্ণময় চরিত্র কে নিয়ে ,যার জীবনের বিবিধতা হয়তো আপনাদের মন্ত্রমুগ্ধ করবে ।
১৯৭৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর , ভারতীয় ফুটবল দলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন কলকাতা তে । তিনি আর কেউ নন কল্যাণ চৌবে মহাশয় ।টাটা ফুটবল একাডেমির হাত ধরে তার বেড়ে ওঠা । এএফসি পরিচালিত অনুর্দ্ধ ১৭ সাফ কাপে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি । প্রথম যুব আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন তিনি ১৯৯৪ সালে। ভারতের অনুর্দ্ধ ২০ দলে, তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন ১৯৯৬ সালে । ভারতীয় সিনিয়র ফুটবল দলের হয়ে ১৯৯৯-২০০৬ সাল অব্দি তিনি গোলকিপারের দায়িত্বে সামলেছিলেন।
ভারতীয় ফুটবল ক্লাবে কল্যাণের অবদান
১৯৯৬ -১৯৯৭ মরশুমে তিনি মোহনবাগানের হয়ে ২৭ টি ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেন ।১৯৯৭-১৯৯৯ মরশুমে তিনি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ৬৭ টি ম্যাচ খেলেন । ১৯৯৯-২০০০ মরশুমে তিনি আবার মোহনবাগানে ফিরে আসেন ।২০০০-০১ তিনি বেঙ্গল মুম্বাই ক্লাবের হয়ে ১৭ টি ম্যাচ খেলেন । ২০০১-২০০৩ সালগাঁওকারের হয়ে তিনি ৫৩ টি ম্যাচ খেলেন । ২০০৩-০৫ মরশুমে তিনি মাহিন্দ্রা ইউনাইটেডের হয়ে খেলেন ।২০০৫-২০০৭ সালে তিনি জেসিটির হয়ে খেলেন ।২০০৭-০৯ সালে তিনি মুম্বাই এফসির হয়ে খেলেন । ২০০৯-২০১০ সাল তিনি সালগাঁওকারের হয়ে খেলেন ।স্বনামধন্য এই মানুষটির খেলোয়াড় জীবনের কিছু উজ্জ্বল মুহূর্ত হলো ১৯৯৭-১৯৯৮ এবং ২০০১-২০০২ সালে তিনি ” সেরা ভারতীয় গোলকিপার হিসাবে বিবেচিত হন “। তিনি দুই বার সাফ কাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন, সাল গুলি হলো ১৯৯৯ এবং ২০০৫।
১৯৯৯ সালেই এএফসি পরিচালিত সাউথ এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছিলো ভারত,তিনি সেই দলের ও সদস্য ছিলেন ।সন্তোষ ট্রফিতে তিনি পাঁচটি রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ১) ঝাড়খন্ড ২) পশ্চিমবঙ্গ ৩) গোয়া ৪) পাঞ্জাব ৫) মহারাষ্ট্র ।তিনি বিদেশী ক্লাবের হয়েও খেলেছেন ,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ ক্লাব ।
ফুটবল প্রশাসকের ভূমিকাতে কল্যাণ
২রা সেপ্টেম্বর ২০২২, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের ১১ তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন কল্যাণ চৌবে ,ভাইচুং ভুটিয়া কে হারিয়ে ।এই পদে তার ঠিক আগেই দীর্ঘদিন আসীন ছিলেন প্রফুল্ল প্যাটেল মহাশয় । বর্তমানে তিনি এই পদে আসীন আছেন এবং ভারতীয় ফুটবল কে দক্ষ হাতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন । ১৬ অগাস্ট ২০২২ সালে ফিফা কাউন্সিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন কে সাসপেন্ড করে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের জন্য ।যা ফিফা রুলে গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হয় ।তার ফলে সাময়িক ভাবে ভারত কে এ এফসি এশিয়ান কাপে যোগদানের থেকে বিরত করা হয় । তার পরে এআইএফএফ নির্বাচন করতে সম্মত হয় প্রেসিডেন্ট পদের জন্য,এবং ২ রা সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে,কল্যাণ চৌবে মহাশয় বিপুল ভোটে জয়ী হন। ভোটের ফলাফল হয় ৩৩-১।
রাজনৈতিক জীবন
২০১৫ সালে কল্যাণ চৌবে তার খেলোয়াড় জীবন থেকে সরে এসে ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য হয়ে রাজনৈতিক আঙিনা তে প্রবেশ করেন ।২০১৯ সালে তিনি কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন । আবারো ২০২১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মানিকতলা বিধানসভা থেকে । তার ঠিক পরেই তিনি উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির প্রেসিডেন্টের পদ ও সামলেছেন ।আগামী ১০ জুলাই মানিকতলা বিধানসভা তে যে উপনির্বাচন হতে চলেছে তাতে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ।